চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার এস নজু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ইশাম (১৬)। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তার পরীক্ষা শুরুর দিনক্ষণ ঠিক ছিল। পরীক্ষা দিয়েই কানাডায় মায়ের কাছে চলে যাওয়ার কথা ছিল ইশামের। তবে মায়ের কোলে আর ফেরা হলো না ইশামের। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে মেধাবী ইশাম।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে খৈয়াছড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ইশামের সঙ্গে থাকা আরও ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাতজন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইশাম যে স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল, সেই নজু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোস্তফা আরজু। তিনি জানান, ইশাম জন্মের পরপরই বাবাকে হারান। ২০০৭ সালে তার বাবা মারা যান। তার মা বর্তমানে কানাডায় থাকেন।
মোস্তফা আরজু বলেন, ‘ইশামরা দুই ভাই ও দুই বোন। তার এক ভাই অস্ট্রেলিয়া থাকেন। বোনদের মধ্যে একজন মায়ের কাছে কানাডায় থাকেন। ঢাকায় লেখাপড়া করেন আরেকজন। নানাদের পরিবারের অনেকে কানাডাপ্রবাসী। এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে ইশামেরও কানাডা চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর ইশাম ও তার ভাই-বোনরা সবাই চাচা আকবর হোসেন মানিকের কাছে থেকে বড় হয়েছে। ইশাম মেধাবী ছাত্র ছিল। সব পরীক্ষায় সে ভালো ফল করতো। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মেধাবী ছেলেটি সবাইকে কাঁদিয়ে ওপারে পাড়ি জমালো।’
ইশামের মৃত্যুর খবর পেয়েই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ছুটে এসেছেন চাচা আকবর হোসেন মানিক। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিলাপ করছিলেন তিনি। বার বার বলছেন, ‘ইশাম, আমি তোর মাকে কী বুঝ দেবো?’
এদিকে, মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়ায় দুর্ঘটনায় হতাহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারে। তারা সবাই ‘আরএনজে কোচিং সেন্টার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ও শিক্ষক।
সূত্র : জাগো নিউজ